১। প্রশাসনের কার্যক্রম কাগজে কলমে।
২। পানিউন্নয়ন বোর্ড থেকে তালিকা ও জনবল দেওয়া হচ্ছে না।
৩। অবৈধ পানি ব্যাবসায়ীদের কাছে প্রশাসন জিম্মি।
নিজেস্ব প্রতিনিধি : ”কাজির গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই” শ্যামনগরের উপকুলিয় ওয়াব্দা বাঁধের অবৈধ পাইপ বাস্ক কল অপসারনে প্রসাশনের কার্যক্রমে প্রবাদটি বাস্তবতা দেখা যাচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোডের কতক অসাধু অফিসারের সহয়তায় কতক অসাধু লবন পানি ব্যাবসায়ী ওয়াব্দা বাধ কর্তন করে পাইপ ও বাস্ক দিয়ে ফসলী জমিতে লবন পানি তুলে চিংড়ী চাষ করতে থাকে। অবৈধ ভাবে ওয়াব্দা বাধ কর্তনের ফলে ওয়াব্দা রাস্তা নষ্ট হয়ে উপকুলিয় শ্যামনগর অঞ্চল ইতিপূর্বে কয়েকবার প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে আইলায় বাধ ভেংগে শ্যামনগরের বিস্তির্ন অঞ্চল প্লাপিত হয়ে হাজার হাজার মানুষ, পশু পাখি মারা যায়। হাজার হাজার একর ফসলী জমির ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

বিগত ১২ বছরে আইলার ক্ষতি এই এলাকার মানুষ কাটিয়ে উঠতে পারিনি। এরপরে আরও কয়েকটি প্রকৃতিক দূর্যোগে বারবার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে বিগত বর্ষা মৌসুমে কয়েকবারের আকাশ বন্যায় দূর্বল ওয়াব্দা বাধ ভেংগে এলাকা প্লবিত হয়। ওয়াব্দা বাধ ভেংগে এলাকা বার বার প্লাবিত হতে থাকলে এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ পানি উন্নয় বোডের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিকটে হাজার হাজার লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি। ক্ষতিগস্ত মানুষ আন্দোলন সংগ্রাম, মানববন্ধন মিছিল মিটিং করেও কোন লাভ হয়নি। স্থানীয় এবং জাতীয় দৈনিকে অসংখ্য প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও প্রশাসন তা আমলে নেয়নি। অবশেষে ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে শ্যামনগরের মানিকখালী গ্রামের হাজী আবুল হোসেনের পুত্র সাংবাদিক হুমায়ুন কবির জনস্বার্থে হাইকোটে ৮১৭৫/২০২১ নং রিট মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় ২রা নভেম্বর তারিখে শুনানী নিয়ে আদালত ওয়াব্দা বাধের অবৈধ পাইপ বাস্ককল অপসারন করে প্রতিবেদন আদালতে পেশ করার জন্য সরকার পক্ষের প্রতি নির্দেশ প্রদান করেন এবং আগামী ৩রা জানুয়ারী পুনরায় শুনানী পূর্বক পরবর্তি আদেশের দিন ধার্য্য করেন। আদালতের এই নির্দেশ পাওয়ার পরে পানি ব্যাবসায়ীদের বাচাতে এবং তাদের নিকট থেকে পাওয়া উপরী টাকা হালাল করতে প্রশাসনের কতক অসাধু অফিসার নুতন কৌশল করতে থাকে। ওয়াব্দা বাধের অবৈধ পাইপ বাস্ককল অপসারনে জন্য সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক বরাবর ২২ মার্চ তারিখে বাপাউবো থেকে চিঠি দিয়ে ম্যাজিঃ চাওয়া হয়। এ চিঠির আলোকে জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে গত ২৮ অক্টোবর শ্যামনগরের ও কালিগঞ্জের এসিল্যান্ডকে ম্যাজিঃ নিয়োগ দিয়ে ওয়াব্দা বাধের অবৈধ পাইপ বাস্ককল অপসারনের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্ত দীর্ঘ তিন মাস অতিবাহিত হলেও ওয়াব্দা বাধের অবৈধ পাইপ বাস্ককল অপসারনে একটি উচ্ছেদ অভিযানও পরিচালিত হয়নি বরং জেলা প্রশাসাকের ঐ অফিস আদেশটি আজও আলোর মুখ দেখেনি। অসাধু লবন পানি ব্যাবসায়ীরা জেলা প্রশাসকের ঐ আদেশটি চেপে রেখে কাগজে কলমে কয়েকটি উচ্ছেদ অভিযান দেখিয়ে আদালতে রিপোট দাখিল করার পায়তারা চালাচ্ছে বলে রিটকারী সাংবাদিক হুমায়ন কবির এই প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করেন। ঘটনার বিষয়ে শ্যামনগরের এসিল্যান্ডের মোঃ শহিদুল্লাহ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উক্ত অফিস আদেশ তিনি ৫/৬ দিন আগে হাতে পেয়েছেন এ সময়ে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী দায়িত্ব থাকার কারনে তিনি কোন অভিযান চালাতে পারেন নি এবং পানি উন্নয়ন বোডের কোন অফিসার তার সাথে যোগাযোগ করেনি। তবে আগামী ৫ জানুয়ারী কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন থাকায় ৫ তারিখের পরে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। কালিগঞ্জের এসিল্যান্ড মোঃ রোকনুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন জেলা প্রশাসকের উক্ত অফিস আদেশটি তিনি অনেক আগেই হাতে পেয়েছেন কিন্ত পানিউন্নয়ন বোডের পক্ষ থেকে ওয়াব্দা বাধের অবৈধ পাইপ বাস্ককল এর তালিকা ও জনবল না পাওয়ায় তিনি আজও কোন উচ্ছেদ অভিযান চালাতে পারেননি। ঘটনার বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন পানি উন্নয়ন বোড থেকে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে ওয়াব্দা বাধের অবৈধ পাইপ বাস্ককল এর তালিকা না দেওয়া হলে কোথায় উচ্ছেদ করবে? তবে ঘটনাটি যেহেতু তিনি শুনেছে তাই ব্যাবস্থা নিচ্ছেন।