নয়াডাক ডেস্কঃ- সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মানিকখালী গ্রামের মৃত গীরেন্দ্র নাথের পুত্র সঞ্জয় কুমার মন্ডল (খোকন)এর দুই সন্তানের জননী স্ত্রী সুসমা মন্ডল সাতক্ষীরার সিবি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে দুই দিন থাকার পরে আজ শনিবার চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায়। সুসমা ৬ মাসের গর্ভবতি হয়ে শ্যামনগরের মর্জিনা নামক এক হাতুড়ে নার্সের খপ্পরে পড়ে। মর্জিনা সুসমাকে ঔষধ খাইয়ে এব্রেশন করানোর চেষ্টা করে এবং হাত দিয়ে এব্রেশন করতে যেয়ে গত ১লা জানুয়ারী তার গর্ভের ৬ মাসের ভ্রুনকে হত্যা করে। যার ফলে সুসমার মলদ্বারের নাড়ী ছিড়ে যায় । গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে সুসমাকে শ্যামনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তার অবস্থার অবনতি দেখে হাসপাতাল কতৃপক্ষ উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে যেতে বলে। তখন সুসমার পরিবার দিশেহারা হয়ে তাকে সেখান থেকে শ্যামনগর রিডা প্রাইভেট হাসপাতাল ও ঝাউডাংগা সুজিত বাবুর ক্লিনিক, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে নিয়ে গেলে তারা এই রোগীর অপারেশনে অপারগতা প্রকাশ করে। অবশেষে সাতক্ষীরা সিবি হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাঃ শরিফুল ইসলাম গত ০৬ জানুয়ারী সুসমাকে অপারেশন করেন। অপারেশনের পরে সুসমার পেটের নাড়ী বাইরে রেখে তিন দিন যাবত ড্রেসিং চলে। গত বৃহঃবার তাকে সিবি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। আজ শনিবার সকাল ১১টায় হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাঃ তাকে মৃত ঘোষনা করেন। সুসমার দুটি সন্তান ভেটখালী এ করিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা ৬ষ্ট ও ৭ম শ্রেনীতে পড়াশোনা করে হাতুড়ে নার্সের এই অমানবিক কর্মকান্ডে পরিবার চরম বিপর্যায়ে শিশু দুটি মা হারা হয়েছে। সুসমা মন্ডলের স্বামী সঞ্জয় কুমার বলেন এ ঘটনায় শ্যামনগর থানায় গত ৭ জানুয়ারী এজহার দিলে পুলিশ মামলা না নিয়ে মর্জিনার বাড়ী থেকে শ্যামনগর থানার এস আই কামাল ঘুরে এসে তাকে বলেন মর্জিনার ছেলে হাসপাতালে যেয়ে চিকিৎসা খরচ দেবে কিন্তু কোন খরচ তো দেয়নি বরং হাসপাতালের বিল দিতে গিয়ে শেষ সম্বল ঘুচিয়েছেন সঞ্জয় কুমার। নর ঘাতক মর্জিনাকে থানা পুলিশ গ্রেফতার করিনি, মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। ঘটনার বিষয়ে শ্যামনগর থানার ওসি নাজমুল হুদার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন কয়েকটি সরকারী প্রোগ্রামে ব্যাস্ত থাকায় মামলা হতে দেরি হয়েছে আর এখন সুসমা মারা যাওয়ায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে নুতন করে এজহার নিয়ে মামলা দায়ের করা হবে। হাতুড়ে নার্সের কবলে পড়ে গর্ভবতির প্রানহানীর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় এলাকার সর্বত্র প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এলাকাবাসী বলছে প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে হাতুড়ে নার্সে মর্জিনা প্রতি নিয়ত বে আইনী এব্রেশন করান অথচ সে সব সময় ধরা ছোয়ার বাইরে থাকে। কেউ কেউ বলছে মর্জিনা হাসপাতাল ও পুলিশ ম্যানেজ করে এই অপকর্ম চালিয়ে যায় বলে ধরা ছোয়ার বাইরে থাকে। ঘটনার বিষয়ে হাতুড়ে নার্স মর্জিনার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি সুসমার বাবদ তিন হাজার টাকা নিয়েছি প্রয়োজনে ফেরত দেবো।